Download
the bengali
font
 
   আমাদের বিষয়ে     জরুরী তথ্যাবলী     সাধারণ প্রশ্নাবলী     আর্থিক শিক্ষা     অভিযোগ   অন্যান্য সূত্রগুলি 
 ব্যাংক ব্যবস্থা
 মুদ্রা ব্যবস্থা
 বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থা
 সরকারী অর্থপত্রের বাজার
 ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি
 পাওনা মেটানোর ব্যবস্থা
হোম >> সাধারণ প্রশ্নাবলী - View
Date: 01/01/2001

অর্থ পরিশোধ ও নিষ্পাদন পদ্ধতি

অর্থ পরিশোধ ও নিষ্পাদন পদ্ধতি

সাধারণতঃ কোনো দেশের জাতীয় অর্থ পরিশোধ  পদ্ধতির   উন্নতির পিছনে সেই দেশের কেন্দ্রীয়ব্যাংকের চালিকা শক্তি প্রধানতঃ কাজ করে। আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক  (ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক) এই উন্নয়নকারী ভূমিকাটি    পালন করছে   এবং একটি নিরাপদ, নিশ্চিন্ত, নির্ভরযোগ্য ও ফলপ্রদ অর্থ পরিশোধ  পদ্ধতি গড়ে তোলার জন্য একাধিক প্রবর্তক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে।   এই বিষয়ে কিছ বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও তার উত্তর নিচে সন্নিবিষ্ট করা হল।

অর্থ পরিশোধ পদ্ধতি কাকে বলে ?

অর্থ পরিশোধ পদ্ধতিহচ্ছে  একটি প্রণালী যার সাহায্যে পরিশোধকর্তাএবং প্রাপকের মধ্যে অর্থমূল্য হস্তান্তরের সুবিধা হয়  ও পরিশোধকর্তা  প্রাপকের প্রতি তাঁর পাওনা মেটানোর দায়িত্বপালন করতে পারেন।  অর্থ পরিশোধ পদ্ধতি অর্থনীতিতে মাল ও পরিষেবার বিনিময়ে অর্থ পরিশোধের  দ্বিমুখী প্রবাহ    বজায় রাখতে সাহায্য করে।

২। অর্থ পরিশোধ পদ্ধতির প্রধান উপাদানগুলি কী কী ?

অর্থ পরিশোধ পদ্ধতির প্রধান উপাদানগুলি নিম্নরূপ- ধিত্রসমূহ যার সাহায্যে পাওনা মেটানো যেতে পারে, নিয়মাবলি, প্রবিধান প্রণালী যা এই আদান প্রদান পদ্ধতির পথনির্দেশ করে, প্রতিষ্ঠান যা এই ব্যবস্থার সুষ্ঠু সম্পাদনে সহায়তা করে এবং আইনি ব্যবস্থা যা বিভিন্ন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুঁজি হস্তান্তর সহজসাধ্য করার উদ্দেশ্যে স্থাপিত

কারা অর্থ পরিশোধ করার জন্য এই  পদ্ধতি ব্যবহার করতে  পারেন?

অর্থ পরিশোধ পদ্ধতি, ব্যক্তি, ব্যাংক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শাসনতন্ত্র(সরকার) দ্বারা একে অন্যের পাওনা মেটানোর জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। অন্য ভাবে বলা যায়, যে কেউ অন্যের পাওনা মেটানোর জন্য এই পদ্ধতির যে কোনো রীতি ব্যবহার করতে  পারেন।

৪। গ্রাহক ব্যাংকের মাধ্যমে কী কী ভাবে পাওনা মেটাতে পারেন?

ভারতে পাওনা মেটানোর জন্য নগদ, চেক, ডিমান্ড ড্র্যাফ্ট, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে প্রদত্ত বৈদ্যুতিন নির্দেশ যার সাহায্যে ব্যাংকতার মক্কেলের হয়ে পাওনা মেটাতে পারে, এই উপায়গুলি ব্যবহৃত হয়স্বল্পমূল্যেরপুনরাবৃত্তিমূলকপাওনা মেটানোর জন্য  বৈদ্যুতিন তহবিল স্থানান্তর (ইলেকট্রনিক ফান্ড্স ট্রান্সফার বা ইএফটি), বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা(ইলেকট্রনিক ক্লিয়ারিং সিস্টেম বা ইসিএস) এবং অধিক মূল্যের পাওনা মেটানোর জন্য  প্রকৃতকালীন থোক নিষ্পাদন ব্যবস্থা (রিয়্যাল টাইম গ্রোস সেট্লমেন্ট বা আরটিজিএস) ব্যবহার করে বৈদ্যুতিনউপায়ে পাওনা মেটানো যেতে পারেভারতে কয়েকটি ব্যাংক আন্তর্জালের মাধ্যমে বৈদ্যুতিন তহবিল  স্থানান্তরের সহায়ক কিছু নির্দিষ্টব্যাংকিং  পরিষেবা সরবরাহ করতে শুরু করেছে

পরিশোধকর্তা প্রাপককে চেক দিলে প্রাপ্য অর্থ কীভাবে মেটানো হয়?

চেক দ্বারা পরিশোধের প্রণালীটি শুরু হয় যখন পরিশোধকর্তা তাঁর ব্যক্তিগত চেক প্রাপককে প্রদান করেন।  প্রকৃত পরিশোধযোগ্য রাশি হাতে পেতে হলে প্রাপককে চেকটি তাঁর নিজস্ব ব্যাংকের  খাতায় জমা করতে হবে। যদি প্রাপকের একই শহরে এবং একই ব্যাংকে খাতা থাকে তা হলে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার দ্বারাতাঁর খাতায় রাশি জমা করা হবে। যদি প্রাপকের অন্য কোনো ব্যাংকে একই বা অন্য কোনো শহরে খাতা থাকে তাহলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরিশোধকর্তারব্যাংকের  কাছ থেকে নিকাশ ঘরের মাধ্যমে রাশি আদায় সুনিশ্চিত করবে।

   ক্লিয়ারিং হাউস কাকে বলা হয় ?

একই শহর/স্থানেঅবস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের শাখার মধ্যে চেক দ্বারা পাওনা মেটানোর সহায়তার জন্য গঠিত একাধিক ব্যাংকের সংঘকে নিকাশ ঘর বলা হয়। এটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষসমূহের পরস্পরের মধ্যে দাবি করা চেক বিনিময় ও সেই রাশির স্বত্ত্বঅর্জনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় মিলনস্থল রূপে কাজ করে। এই ব্যবস্থাকে নিকাশি ব্যবস্থাবলা হয়। সাধারণতঃ কোনো একটি ব্যাংককে নিকাশি ব্যবস্থার ভারপ্রাপ্তব্যাংক রূপে নিয়োজিত করা হয়। চারটি মহানগরী ও কয়েকটি প্রধান শহরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকনিকাশ ঘরের কার্যব্যবস্থা দেখাশোনা করছে। প্রতিটি নিকাশ ঘরের কার্য পরিচালনার জন্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা নির্দেশিত সমরূপ প্রবিধান ও নিয়মাবলী রয়েছে।   সমগ্র দেশে ১০০০-এরও বেশি নিকাশ ঘর চেক দ্বারা পাওনা মেটানোর সহায়তার  কাজ করছে। এগুলি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংক দ্বারা    নিয়ন্ত্রিত।

  এই নিকাশি ব্যবস্থায় কত সময় লাগে ?

সাধারণতঃ একই শহরে পরিশোধযোগ্য চেকের ক্ষেত্রে (স্থানীয় চেক) - দিন লাগেকোনো কোনো‌‍ বড় শহরে উচ্চ মূল্য নিকাশি নামক একটি ব্যবস্থা আছে   যার সাহায়্যে একই দিনের মধ্যে চেক নিকাশ হয়ে যায় এবং গ্রাহক পরের দিনই  লভ্যাংশ ব্যবহার করতে পারেনতবে এর আওতা খুবই সীমিত   এবং সাধারণতঃ প্রধান ব্যবসায়িক  কেন্দ্রে অবস্থিত শাখাগুলিতেই সীমাবদ্ধ, যথা, মুম্বইতে ফোর্ট এবং নরিমান পয়েণ্ট অঞ্চল এবং দিল্লিতে কনট প্লেস অঞ্চল

শহরের বাইরের চেকের ক্ষেত্রেতিন থেকে দশ দিন সময় লাগতে  পারেভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সমস্ত ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছে তাদের চেক আদায়ের পন্থাপ্রচারিত করতে যাতে গ্রাহকরা মোটামুটি ধারণা করতে পারেন কবে নাগাদ লভ্যাংশ ব্যবহার করা যাবেস্বাভাবিক সময়সীমার চেয়ে দেরি হলে ব্যাংক ক্ষতিপূরণ দিতে  বাধ্য থাকবে (গ্রাহক দাবি না করলেও)।

৮। অর্থ  পরিশোধ করার জন্য চেক ব্যবহার করলে কি গ্রাহককে কোনোরকম ব্যয়ভার বহন করতে হবে?

যাঁকে চেক দ্বারা পাওনা মেটানো হয়েছে তাঁকে ব্যাংকের মাধ্যমেসেই প্রকৃত অর্থমূল্য পেতে গেলে কিছু ব্যয়ভার বহন করতে হবে। স্থানীয় চেকের ক্ষেত্রে কোনো ব্যয়ভার ধার্য করা হয় না। বহিরাগত চেকের ক্ষেেত্রব্যাংক  কিছু  প্রক্রিয়াকরণ/আদায় মূল্য গ্রহণ করবে, যা নির্ভর করবে  দেয় রাশির পরিমাণ ও স্থানেরউপর । মূল্যের পরিমাণ সাধারণতঃ ভারতীয় ব্যাংক সংগঠন বা ব্যাংকগুলি নিজেরাই স্থির করে থাকে। ব্যাংকগুলি পরিষেবা মূল্যের অনুসূচিও প্রচার করতে বাধ্য।

  চেক নগদ টাকা ব্যবহার না করে কী ভাবে অর্থ পরিশোধ করা যায় ?

দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে বৈদ্যুতিন নির্দেশের সাহায্যেচেক ব্যবহার না করে অর্থ পরিশোধ করা যায়। এই ধরণের পরিশোধ পদ্ধতির সাহায্যার্থে বৈদ্যুতিন তহবিল স্থানান্তর, বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা,  আকলন-পত্র( ক্রেডিট কার্ড), বিকলন-পত্র(ডেবিট কার্ড) ইত্যাদি খুচরো পরিশোধ উপায় গ্রহণ করা যায়।

১০এক ব্যাংকের গ্রাহক কি অন্য কোনো ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করতে পারবেন ?

অবশ্যই পারবেন, যদি গ্রাহকের ব্যাংকের সঙ্গে এটিএম-এর মালিক ব্যাংকের সেরকম বন্দোবস্ত থাকে। বর্তমানে  একক ভাবে ব্যবহার্য এটিএম-এর সংখ্যা খুবই কম এবং এই রকম একক ভাবে ব্যবহার্যএটিএম সাধারণতঃ শাখাগুলিতেই অবস্থিত থাকে। অন্য ব্যাংকের এটিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিনিময়-মূল্য  নামক একটি পরিষেবা কর ধার্য করা হয়ে থাকে।

১১এটিএম কি কেবলমাত্র নগদ টাকা তোলার জন্যই ব্যবহৃত হয় ? নগদ টাকা তোলা ছাড়াও এটিএম-এর সাহায্যে বিল মেটানো, একাধিক খাতার মধ্যে তহবিল স্থানান্তর, খাতাতে নগদ চেক জমা করা, জমা-খরচ স্থিতির অনুসন্ধান এবং এটিএম-এর মালিক ব্যাংকের দ্বারা প্রস্তাবিত  বিভিন্ন ব্যাংকিং কারবার করা যায়

১২অর্থ পরিশোধ পদ্ধতিতে  আকলন-পত্র( ক্রেডিট কার্ড) বিকলন-পত্র(ডেবিট কার্ড) কী ভুমিকা পালন করে ?

মাল ও পরিষেবার বিনিময়ে নগদ টাকা বা চেকের ব্যবহার ছাড়া  মূল্য পরিশোধের সহজতর  পথ প্রস্তুতকরে দেওয়ার জন্য বর্তমানে দেশে আকলন-পত্র ও বিকলন-পত্রের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।   ব্যাংক তার গ্রাহকদের আকলন-পত্র বণ্টন করে। আকলন-পত্র/বিকলন-পত্র দ্বারা অর্থ পরিশোধ স্বীকারকারী বণিক প্রতিষ্ঠান তাঁর নিজের ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকের ব্যাংক থেকে পাওনা রাশি আদায় করে নেয়।

১৩ক্রেডিট কার্ড ডেবিট কার্ড-এর পার্থক্য কী?

যে কার্ডের সাহায্যে সরাসরি গ্রাহকেরব্যাংক খাতার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যায় তাকে  বিকলন-পত্র(ডেবিট কার্ড) বলা হয়।(লেনদেনের রাশি  সঙ্গে সঙ্গেকেটে নেওয়া হয়)।   কার্ড ব্যবহারকারীর খাতায় জমা রাশির পরিমাণই অনুমোদিত লেনদেনের  রাশির পরিমাণ। অপর দিকে, আকলন-পত্র( ক্রেডিট কার্ড) ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে বাকিতে পাওনা মেটানোর সুযোগ দেওয়া হয় যা তিনি পরবর্তী সময়ে বিল হাতে পাওয়ার পরে পূর্ণতঃ বা দফায় দফায় মেটান।

১৪। ইএফটি কাকে বলা হয়?

ইএফটি অর্থাত্‍ বৈদ্যুতিনরাশি স্থানান্তরব্যবস্থার মাধ্যমেযে কোনো ব্যক্তি যিনি অপর কোনো ব্যক্তি/ প্রতিষ্টান ইত্যাদিকে    অর্থ পরিশোধ করতে চান, তিনি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নগদে পাওনা মেটাতে পারেন   কিংবা তাঁর নিজের খাতা থেকে সরাসরি প্রাপকের খাতায় রাশি স্থানান্তরিত করার নির্দেশ/   প্রাধিকার অর্পণ করতে পারেন সম্পূর্ণ বিশদ তথ্য যেমন প্রাপকের নাম, ব্যাংক খাতা সংখ্যা, খাতার প্রকার(   সঞ্চয় বা চালু), ব্যাংকের নাম, শহর, শাখা   প্রভৃতিস্থানান্তরিত করার অনুরোধ জানানোর সময়ে  ব্যাংকের কাছে সরবরাহ করা প্রয়োজন যাতে অর্থরাশি প্রাপকের কাছে সঠিক ভাবে ও দ্রুত পৌঁছতে পারে   ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ইএফটি পরিষেবা সরবরাহ করে

১৫। আমি কি ভারতের যে কোনো জায়গায় রাশি স্থানান্তরিত করার জন্য ইএফটি ব্যবহার করতে পারি?

বর্তমানে সারা দেশের প্রায় ১৫টি প্রধান শহরে ব্যাংকের শাখাগুলির মধ্যে রাশি স্থানান্তরিত করার জন্য ইএফটি সুবিধা পাওয়া যায়। বিশেষ ইএফটি নামক আর একটি  বিশেষ যোজনার মাধ্যমে  প্রায় ২০০-রও বেশি শহরে আরও অনেকগুলি বিশিষ্ট শাখাকে ( যেগুলি ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে গ্রথিত) বৈদ্যুতিনরাশি স্থানান্তরব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। এই সব শহর ও শাখার বিস্তারিত বিবরণ স্ব-স্ব ব্যাংকের কাছ থেকে তথা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

১৬। ইএফটির মাধ্যমে রাশি স্থানান্তরিত করতে কত সময় লাগে?

রাশি স্থানান্তরের অনুরোধ/ সংঘটনের সময়ের উপর নির্ভর করে সাধারণতঃ একই দিনে বা খুব বেশি হলে পরবর্তী কাজের দিনে রাশি স্থানান্তরিতহয়ে যায় রাশি স্থানান্তর করার অনুরোধ জানানোর সময়ে  ব্যাংকের কাছ থেকে গ্রাহক যেন এই বিষয়ে সঠিক জেনে নেন

১৭।ইএফটির মাধ্যমে রাশি স্থানান্তরিত করতে কি কোনো মূল্য দিতে হয়?

ডিম্যাণ্ড ড্র্যাফ্ট, পে অর্ডার প্রভৃতি অন্যান্য পরিষেবার মত ইএফটির ক্ষেত্রেও ব্যাংকগুলি সাধারণতঃ কিছু প্রক্রিয়াকরণ মূল্য গ্রহণ করে থাকে এই মূল্য রাশি র পরিমাণ এবং ব্যাংকও গ্রাহকের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে তবে বর্তমানে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত নিকাশ ঘরগুলিতে এই রাশি স্থানান্তর কারবার প্রক্রিয়াকরণ চালানোর জন্য ব্যাংকগুলির কাছ থেকে  যে ইএফটির উপর লাগু মূল্য আদায় করা হচ্ছিল তা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে এর ফলে ব্যাংকগুলির    প্রক্রিয়াকরণের খরচাও আনেক কমে গেছে

১৮। রাশি প্রাপ্তি/ পাওনা মেটানোর জন্য আমি কীভাবে বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা ব্যবহার করতে পারি?

বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থাবা ইসিএস একটি খুচরো পরিশোধ ব্যবস্থা যার সাহায্যে একই ধরণের প্রভূত পরিমাণ   পরিশোধ/প্রাপ্তিসম্পন্ন করা যায়, বিশেষতঃ যখন প্রতিটিএকক পরিশোধ পুনরাবৃত্তিমূলক এবং অপেক্ষাকৃত কম অঙ্কের এই ব্যবস্থাটি বণিকসঙ্ঘ ও সরকারি বিভাগগুলি দ্বারা অধিক পরিমাণ পাওনা মেটানো/ লাভের জন্য পরিকল্পিত, একক ব্যক্তি কর্তৃক রাশি স্থানান্তরের জন্য নয় ইসিএস সুবিধা ভারতের ৪৭টি কেন্দ্রে পাওয়া যায় যেখানে নিকাশ ঘরগুলি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেখানে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এটি পরিচালনা করে এবং অন্য কেন্দ্রগুলি এসবিআই ও তার সহযোগীবৃন্দ দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে ইসিএস আবার আরও দুটি ভাগে বিভক্ত- ইসিএস(আকলন), ব্যক্তি/বিক্রেতাকে অধিক পরিমাণ রাশি পরিশোধের জন্য এবং ইসিএস বিকলন), একক ব্যক্তির কাছ থেকে অধিক পরিমাণ পরিষেবা মূল্য রাশি প্রাপ্তির জন্য

১৯। ই-সি-এস (জমা) কাকে বলা হয়?

ই-সি-এস (জমা) দ্বারা একক ব্যক্তি/বণিকসঙ্ঘ তার ব্যাংকের খাতা থেকে একাধিক  প্রাপকের   খাতায় সরাসরি রাশি জমা করে পাওনা মেটাতে পারে উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বণিকসঙ্ঘগুলি তাদের বিনিয়োগকারীদের পর্যাবৃত্তলভ্যাংশ/সুদ মেটানোর জন্য ইসিএস(আকলন) ব্যবস্থা ব্যবহার করে একই ভাবে, ব্যাংক, সরকারি দফতর ইত্যাদি তাদের কর্মচারীদের মাসিক বেতন মেটানোর জন্যও ইসিএস(আকলন) ব্যবস্থা ব্যবহার করে এই ব্যবস্থার সাহায্যে বিক্রেতাকেপুনরাবৃত্তিমূলকপরিশোধও করা চলে এর জন্য পরিশোধকারী ব্যক্তি/বণিকসঙ্ঘের কাছে প্রাপক ব্যক্তিবিশেষের ব্যাংক খাতার বিশদ বিবরণ থাকা প্রয়োজন এই পরিশোধ  পরিশোধকারী  বণিকসঙ্ঘের প্রতিশ্রুত ব্যাংকের মাধ্যমে নির্বাহিত হয়  এবং প্রতিশ্রুতব্যাংকটিকে নিশ্চিত হতে হয় যে নিষ্পাদনের দিনে ঐ বিশেষ পরিশোধের জন্য তার খাতায় যথেষ্ট রাশি বজায় আছে সাধারণতঃ যে ব্যাংকের সঙ্গে বণিকসঙ্ঘটির খাতা চালু থাকে সেটিই প্রতিশ্রুত ব্যাংক হয়

২০ ই-সি-এস (খরচ) কাকে বলা হয়?

ই-সি-এস (খরচ) অধিকাংশ ক্ষেত্রেপরিষেবা প্রদানকারী বণিকসঙ্ঘ যেমন দূরভাষ কোম্পানি, বিদ্যুৎ কোম্পানি প্রভৃতিদ্বারা তাদের গ্রাহকদের ব্যাংকের খাতা থেকে সরাসরি পাওনা বিলের অর্থকেটে নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয় নগদ বা চেকের মাধ্যমে  বিদ্যুতের বিল মেটানোর পরিবর্তে উপভোক্তা(একক ব্যক্তি বা বণিকসঙ্ঘ) বিদ্যুৎ সরবরাহকারী/বণিকসঙ্ঘ/পর্ষদের খাতায় সরাসরি নিজের খাতা থেকে রাশি জমা করাতে পারেন এর জন্য উপভোক্তাকেবিদ্যুৎ সরবরাহকারীর কাছে তাঁর ব্যাংক খাতার বিশদ জানিয়ে  একটি আবেদন করতে হবে,(যদি সরবরাহকারী ই-সি-এস (খরচ) যোজনা গ্রহণ করে থাকেন) যেখান থেকে মাসিক/দ্বিমাসিক বিলের অর্থ সরাসরি কেটে নেওয়া হবে এই বিশদ বিবরণ গ্রাহকের ব্যাংক দ্বারা প্রত্যয়িত হতে হবে এই পন্থাটি বেছে নিলে পরিষেবক  বণিকসঙ্ঘ উপভোক্তার ব্যাংককে পরামর্শ দেবে বিল মেটানোর    নির্দিষ্ট তারিখে গ্রাহকের খাতা থেকে বিলের অর্থকেটে নিয়ে তা বণিকসঙ্ঘের খাতায় জমা করতে এটি করার জন্য প্রতিশ্রুত ব্যাংকঅর্থাৎ যে ব্যাংকের সঙ্গে অর্থপ্রাপকবণিকসঙ্ঘটির খাতা চালু থাকে তার খাতা জমা করা হয় প্রকৃত বিলটি পূর্বের মতই গ্রাহকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়

২১। বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা(ইসিএস) ব্যবহার করতে কি কোনো মূল্য দিতে হয়?

বৈদ্যুতিনরাশি স্থানান্তর ব্যবস্থার(ইএফটি) মত বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থার(ইসিএস) ক্ষেত্রেও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বর্তমানে ব্যাংকগুলির উপরে ধার্য সমস্ত প্রক্রিয়াকরণ মূল্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে ব্যাংকগুলির অবশ্য তাদের নিগমবদ্ধ গ্রাহকদের কাছ থেকে এই সুবিধা ব্যবহার করার জন্য মূল্য দাবি করার স্বাধীনতা আছে

২২ কোনো অনাবাসী ভারতীয় কীভাবে ভারতে টাকা পাঠাতে পারেন?

অনাবাসী ভারতীয় হিসাবে যে কোনো ব্যক্তি বিদেশি ব্যাংক প্রদত্ত সুবিধাগুলি ব্যবহার করে সাধারণ ব্যাংকিং     পদ্ধতির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠাতে পারেন এছাড়াও একজন অনাবাসী ভারতীয় অনুমোদিত অর্থ স্থানান্তর নিযুক্তক (মানি ট্রান্সফার এজেণ্টস বা এমটিএ)-এর মাধ্যমেও ভারতে টাকা পাঠাতে পারেন ইদানীং অনেক ব্যাংক তাদের অভ্যন্তরীণ প্রেষিতক পদ্ধতি আরম্ভ করেছে যার সাহায্যে অত্যন্ত অল্প সময়ে অর্থ স্থানান্তর করতে সুবিধা হয়

২৩। ব্যাংকের নিজেদের মধ্যে লেনদেনের ক্ষেত্রে কীভাবে অর্থের  আদান প্রদান হয়?

সাধারণভাবে,  ব্যাংকের নিজেদের মধ্যে লেনদেনের ক্ষেত্রে( গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়) উচ্চ মূল্যের অর্থের  আদান প্রদান হয় তাই এই ধরণের লেনদেনকে উচ্চ মূল্য রাশি স্থানান্তর বলা হয় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক-এর সঙ্গে ব্যাংকগুলির যে খাতা থাকে, প্রকৃত রাশি স্থানান্তর তার মাধ্যমেই সংঘটিত হয় এই উদ্দেশ্যে ব্যাংকগুলি একে অপরকে তাদের ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক-এর খাতার চেক কেটে দিতে পারে,  যা পরবর্তী সময়ে নিকাশ ঘর দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত হবে অথবা আরটিজিএস নামক  উচ্চ মূল্য রাশি স্থানান্তরব্যবস্থাও ব্যবহার করতে পারে যেখানে বৈদ্যুতিন নির্দেশভিত্তিক তাৎক্ষণিক রাশি স্থানান্তর সম্ভব, ঠিক  ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক সংগঠনের ক্ষেত্রে ইএফটির মত

 

২৪  প্রকৃতকালীন থোক নিষ্পাদন ব্যবস্থা (রিয়্যাল টাইম গ্রস সেট্লমেন্ট বা আরটিজিএস) কাকে বলা হয়?

২০০৪ সালের মার্চ মাস থেকে ভারতে প্রবর্তিত প্রকৃতকালীন থোক নিষ্পাদন ব্যবস্থার(রিয়্যাল টাইম গ্রোস সেট্লমেন্ট বা আরটিজিএস) সাহায্যে ব্যাংকগুলি দ্বারা তাদের খাতা থেকে অন্য ব্যাংকের খাতায় রাশি স্থানান্তরিত করার জন্য বৈদ্যুতিন নির্দেশ প্রেরণ করতে পারে আরটিজিএস ব্যবস্থাটি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা প্রতিপালিত/পরিচালিত এবং এটি বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে দ্রুত কার্যকরী রাশি স্থানান্তরের একটি উপায় যার ফলে ব্যাংকগুলির আর্থিক লেনদেনের সুবিধাহয় নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে ব্যাংকগুলির মধ্যে রাশি স্থানান্তর প্রকৃতকালীন ভিত্তিতে সংঘটিত হয় সুতরাং প্রাপকের কাছে সঙ্গেসঙ্গে অর্থ পৌঁছে যায় এবং প্রাপকেরব্যাংকের উপর দাযিত্ব থাকে ঘণ্টার মধ্যে প্রাপকেরখাতায় রাশি জমা করার

২৫একক ব্যক্তিও কি আরটিজিএস-এর মাধ্যমে পাওনা মেটাতে পারেন?

হ্যাঁ, একক ব্যক্তিওতাঁর ব্যাংকের সাহায্যে আরটিজিএস-এর মাধ্যমে রাশি স্থানান্তরিত করতে পারেন যদিও ব্যবস্থাটি মূলতঃ অধিক মূল্য পরিশোধের জন্য পরিকল্পিত,   ব্যাংকের  গ্রাহকরা তাঁদের সময়ভিত্তিক জরুরি  স্বল্প  মূল্য পরিশোধের জন্যও আরটিজিএস ব্যবস্থাটি ব্যবহার করতে পারেন  আরটিজিএস লেনদেনের জন্য কোনো অধিক মূল্য বা স্বল্প  মূল্য সংজ্ঞা নির্দিষ্ট নেই ৩১ জুলাই ২০০৫ অবধি ভারতের ৪০১টি শহরে ব্যাংকের ৭৫০০টিরও বেশি শাখায় আরটিজিএস ব্যবস্থা উপলব্ধ ছিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ২০০৬-এর  মার্চের মধ্যে অন্ততঃ১০,০০০টি শাখায় আরটিজিএস ব্যবস্থাউপলব্ধ করার পরিকল্পনা করছে বর্তমানে, সব ব্যাংকের শাখায় আরটিজিএস-এর মাধ্যমে রাশি স্থানান্তর ব্যবস্থা সক্রিয় নেই  ব্যবস্থাটি ব্যবহার করতে ইচ্ছুক গ্রাহক যেন তাঁর নিজের ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নেন যে তাঁর নিজের ও প্রাপকের ব্যাংকে আরটিজিএস-এর মাধ্যমে রাশি স্থানান্তর ব্যবস্থা সক্রিয় আছে কী না এই ধরণের রাশি স্থানান্তরেরজন্য ব্যাংকগুলিতাদের বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী এবং ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের উপর নির্ভর করে  মূল্য ধার্য করতে পারে গ্রাহকরাও রপ্রাপকেরখাতায় রাশি জমা হতে দেরি হলে সুদ দাবি করার অধিকার পোষণ করেন

২৬পরিশোধ  ব্যবস্থার অন্তর্গত গ্রাহক পরিষেবা সংক্রান্ত কোনো অভিযোগের ক্ষেত্রে আমি কার সঙ্গে যোগাযোগ করব?

গ্রাহক অভিযোগের প্রতিবিধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গেযোগাযোগ করতে পারেন ব্যাংকের কাছ থেকে উত্তর/ মনোমত প্রতিবিধানের অভাবের ক্ষেত্রেগ্রাহকস্থানীয় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দফতরের  অভিযোগ প্রতিবিধান কোষের  সঙ্গেযোগাযোগ করতে পারেন, যদি তা সেখানে উপলব্ধ থাকে গ্রাহকঅভিযোগের  প্রতিবিধানের জন্য ব্যাংকিং ওম্বুড্স্ ম্যানের দফতরেও যোগাযোগ করতে পারেন

২৭চেক ছাঁটাই (ট্রাংকেশন) কাকে বলা হয়?

চেক ছাঁটাই (ট্রাংকেশন) একটি বৈদ্যুতিন তথ্য/প্রতিচ্ছবি নির্ভর চেক নিকাশি ব্যবস্থাযার সাহায্যে একাধিক ব্যাংকের মধ্যে বাস্তবিক প্রকরণ বিনিময় ব্যতিরেকেই চেক নিকাশি ও নিষ্পাদন সম্পন্ন হতে পারে

২৮চেক ছাঁটাইয়ের ফলে ব্যাংকের গ্রাহকরা কীভাবে লাভবান হবেন?

চেক ছাঁটাইয়ের ফলে গ্রাহকদের চেকগুলি আরও দ্রুত নগদে পরিণত করা যাবে, যেহেতু টি+০ স্থানীয় নিকাশ এবং টি+১ আন্তর্শহরনিকাশচেক ছাঁটাই  ব্যবস্থা(সিটিএস)  দ্বারা সম্ভব সিটিএস  দ্বারাসরাসরি প্রক্রিয়াকরণ ও  স্বয়ংক্রিয়পরিশোধ  প্রক্রিয়াকরণ , উভয়ই সম্ভবপর হওয়ায় চেকগুলি আরও দ্রুত নগদে পরিণত করার সঙ্গেসঙ্গেগ্রাহক এবং ব্যাংকের ব্যয়েরও হ্রাস হবেসিটিএস -এর উপর ভিত্তি করে ব্যাংকগুলির পক্ষে নিত্যনূতন পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহও সম্ভব হবে   এ ছাড়াও ব্যাংকগুলির  সমন্বয় ও জাল নিকাশির সমস্যা হ্রাস পাবে

২৯। পরিশোধ ব্যবস্থায় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক-এর ভূমিকা কী?

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক পরিশোধ ব্যবস্থায়নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষকের ভূমিকা পালন করা ছাড়াও একটি নিষ্পাদনকারী ব্যাংকের ভূমিকায় কাজ করে এবং সেই সঙ্গে অনুঘটক, পরিচালক ও ব্যবহারকারীর ভূমিকাও পালন করে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দেশে আরও নিরাপদ ও কার্যকরী পরিশোধ ব্যবস্খা প্রবর্তনের জন্য অবিরত নতুন নতুন পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে ৮০-র দশকের শেষ দিকে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দেশের চারটি মহানগরে ( মুম্বই, নয়া দিল্লি, চেন্নাই ও কলকাতা) চৌম্বক কালি লিপি পরিচিতি ( ম্যাগনেটিক ইংক ক্যারেকটার রেকগনিশন বা এমআইআরসি) ভিত্তিক চেক নিকাশির প্রবর্তন করে ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি ইসিএস এবং ইএফটির মত বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা চালু হয় ২০০৪-০৫ সালে আরটিজিএস চালু হয় এই সব নতুন কার্যপদ্ধতি বা ব্যবস্থা প্রবর্তন করার সঙ্গেসঙ্গেভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলির পরিমার্জন/পরিশোধন সুনিশ্চিত করে চলেছে, যাতে তাদের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায় এবং গ্রাহকদের প্রয়োজন আরও ভালোভাবে মেটে প্রযুক্তির অগ্রগতির সুযোগ নিয়ে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বিদ্যমান পদ্ধতিগুলিতেঅতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংযোজন ঘটিয়েছে যাতে সেগুলি আরও নিরাপদ হয় এবং লেনদেনের সততা বজায় থাকে

পরিশোধ ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশ পরিচালনা করা ছাড়াও    ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক একজন ব্যবহারকারীরূপে এই ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করেভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক পরিষেবা সরবরাহকারী হিসাবে কাজ করে এবং ব্যবস্থাটি সুস্থিত হলে অন্য ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানকঅধিকতর উন্নতিবিধানেরউদ্দেশে দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেওয়া হয়এছাড়াও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক  বিভিন্ন পরিশোধ ব্যবস্থায়নিয়ন্ত্রক নিরীক্ষকের ভূমিকা পালন  করে

৩০। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক কীভাবে পরিশোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে?

অর্থ পরিশোধ ও নিষ্পাদন পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ পর্ষদ ( বোর্ড ফর রেগুলেশন অ্যাণ্ড সুপারভিশন অফ পেমেণ্ট অ্যাণ্ড সেট্লমেণ্ট সিস্টেম বা বিপিএসএস) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক-এর কেন্দ্রীয় পর্ষদের একটি উপ সমিতি  এবং পরিশোধ ব্যবস্থার উপর সর্বোচ্চনীতি নির্ধারক সংস্থা জাতীয় পরিশোধ পরিষদ (ন্যাশনালপেমেণ্ট কাউন্সিল বা এনপিসি) নামক একটি প্রায়োগিক সমিতি পর্ষদের সহায়তা করে, যার সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন  এই বিষয়ের প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞরা পর্ষদএবং পরিষদ উভযকেই সাহায্য করার জন্য রয়েছে পরিশোধ ও নিষ্পাদন পদ্ধতিবিভাগ ( ডিপার্টমেণ্ট অফ পেমেণ্ট অ্যাণ্ড সেট্লমেণ্ট সিস্টেম বা ডিপিএসএস) নামে একটি নবগঠিত বিভাগ পর্ষদকে দেশের বিদ্যমান এবং ভবিষ্যৎ যাবতীয় পরিশোধ ব্যবস্থাঅনুমোদন, নীতি নির্ধারণও মানদণ্ড নিরূপনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে পর্ষদএই সব ব্যবস্থা ও তৎসংক্রান্ত নীতি   বিষয়ে সদস্য নির্বাচন নিয়মাদি নির্ধারণ করার ক্ষমতাও বহন করে

৩১। বিগত দশকে ভারতের অর্থ পরিশোধ ও নিষ্পাদন পদ্ধতিতে কী কী বিশেষ অগ্রগতিপরিলক্ষিত হয়েছে?

বিগত দশকে সাধারণ জনগণ এবং নিগমবদ্ধ নিকায়গুলিকে প্রদত্তঅর্থ পরিশোধ পদ্ধতির প্রভূত উন্নতি হয়েছে এটি হয়েছে অংশতঃ পরিষেবা সরবরাহে ক্রমবর্দ্ধমান প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশতঃ ব্যাংকগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার ফলে উদ্ভূত প্রকরণগত পরিবর্তনের কারণে

দৃশ্যমান পরিবর্তনগুলি নিম্নরূপ-

প্রথমতঃ, চেক নিকাশি ব্যবস্থার অপরিসীম উন্নতি হয়েছে আঞ্চলিক চেক গ্রহণের সময়  কমে দুই থেকে তিন দিনে দাঁড়িয়েছে আগে ৪ থেকে ৫ দিন লাগত   ৪২টি ব শহরে স্বয়ংক্রিয় চেক  প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র বসানো হয়েছে যেখানে শহরে ব্যাংকের সমস্ত শাখায গৃহীত চেক রাত্রে প্রক্রিয়াকরণ করা হয় শহরের বাইরের চেকের গ্রহণের সময়  ও কমানো হয়েছে এখন পরিশোধ কেব্দ্রেরঅবস্থানঅনুযায়ী  ৪ থেকে ১০ দিন লাগে আগে ১০ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগত

দ্বিতীয়, ৯০-এর দশকে বৈদ্যুতিনরাশি   স্থানান্তর ব্যবস্থার কিছু ভিন্ন ভিন্ন রূপের প্রচলন শুরু হয় বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থাকাজে লাগিয়ে   বৃহৎ নিগমবদ্ধ নিকায়গুলির পক্ষে লভ্যাংশ, সুদ ও প্রত্যর্পণ দেয় তারিখে  বৈদ্যুতিনভাবে মেটাতে সুবিধা হয় শুধু যে বিনিয়োগকারী জনসাধারণ   নির্ধরিত দিনে তাঁদের প্রাপ্য পাচ্ছিলেন তাই নয়,  নিগমগুলিও কাগজে ছাপাতে না হওয়ায় প্রচুর খরচ বাঁচাতে সক্ষম হয় ২০০৫-০৬ সালে ৩৬০ লক্ষ এই রকম লেনদেন ইসিএস-এর মাধ্যমে সংঘটিত হয় এ থেকেই ব্যয় সংকোচের পরিমাণ আন্দাজ করা যেতে পারে একই ভাবে পরিষেবা সরবরাহকারী নিকায়গুলিও আজকাল তাদের বিল ইসিএস-এর মাধ্যমেদেয় তারিখে  জমা নিতে পারে নগদ অর্থ প্রবাহ পরিচালনা অনেক সহজ হয়ে উঠেছে   ২০০৪-০৫ সালে ১৬০ লক্ষ এই রকম লেনদেন সংঘটিত হয়

তৃতীয়, ব্যাংক দ্বারা বৈদ্যুতিনরাশি স্থানান্তরব্যবস্থার(ইএফটি)  প্রচলন  অর্থ স্থানান্তর দৃশ্যপটে পরিবর্তন এনেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক নির্মিত পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি গ্রাহকদের একই দিনে রাশি স্থানান্তরের সুবিধা সরবরাহ   করতে শুরু করেছে ১৫টি মুখ্য  কেন্দ্রে ব্যাংক গ্রাহকরা এই সুবিধা ব্যবহার করে পরস্পরের মধ্যে রাশি স্থানান্তর করতে পারেন বিশেষ ইএফটি নামে ইএফটির একটি ভিন্ন রূপ   বিশেষ করে নেটওয়ার্কযুক্ত শাখাগুলির জন্য পরিকল্পিত হয়েছে যেটি দেশের যে কোনো জায়গায় অবস্থিত পরিগণক ও নেটওয়ার্কযুক্তশাখাগুলির বদ্ধ গোষ্ঠীর মধ্যে একই দিনে  রাশি স্থানান্তর করতে সাহায্য করে আন্তর্জাল পরিকাঠামো সংবলিত ব্যাংকগুলি গ্রাহকদের কাছ থেকে ইএফটির অনুরোধ পাচ্ছে এবং সরাসরি তা কার্যকর করছে

চতুর্থ, প্রকৃত কালীন থোক নিষ্পাদন ব্যবস্থার(আরটিজিএস) প্রয়োগ ইএফটি দৃশ্যপটে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে নিগমবদ্ধ নিকায়সমূহ এবং অন্যান্য ব্যাংক গ্রাহকরা এখন  নির্দিষ্ট ব্যাংকগুলিতে( বর্তমানে প্রায় ৯৬০০টি) তাৎক্ষণিক রাশি স্থানান্তর করতে পারেন আরটিজিএস পরিচালন নিয়ম অনুসারে, যদি জমা পুঁজি প্রযোজ্য না হয় তবে ২ ঘণ্টার মধ্যে তা ফেরৎ দিতে হবে-অর্থাৎ সর্বোচ্চ বিলম্ব সীমা ২ ঘণ্টা

পঞ্চম, দেশে এটিএম যন্ত্র বসানোর ক্ষেত্রে অতি দ্রুত প্রসার ঘটেছেব্যাংকের গ্রাহকরা আজকাল ২৪X ভিত্তিতেনগদ টাকা তোলা, জমা করা, জমা-খরচের হিসাব জানা, চেক বইয়ের জন্য অনুরোধ করা, নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রভৃতির জন্য তাঁদের অ্যাকাউণ্টের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেনদেশে বর্তমানে এটিএম যন্ত্রের সংখ্যা ১৬,০০০-এর কাছাকাছি এবং এই সংখ্যাটি প্রত্যেক মাসেই কয়েকশো করে বাড়ছে

ষষ্ঠতঃ,  বিগত তিন -চার বছরে দেশে পরিশোধ মাধ্যম হিসাবে পরিশোধ পত্রের ( আকলন ও বিকলন পত্র) ব্যবহারের বিস্ময়কর প্রসার হয়েছে ২০০৪ সালের শেষাশেষি দেশে ৪.৩৩   কোটি পরিশোধ পত্র প্রচলিত ছিল পরিশোধ পত্রেরএই ক্রমবর্ধমান ব্যবহার শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও ব্যবহারিক সুবিধার জন্যই হয় নি, দেশে

খুচরো ভোগ্যপণ্য ক্রেতার আকস্মিকবিপুল সংখ্যাবৃদ্ধিও এর জন্য দায়ী।

ভারতের অর্থ পরিশোধ  ব্যবস্থা-মুখ্য পরিসংখ্যান

চেক ক্লিয়ারিং

ক্লিয়ারিং হাউসের সংখ্যা

১০৪৭

 

এমআইসিআর   চেক প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা সম্পন্ননিকাশ ঘরের সংখ্যা

৪২

 

অতিরিক্ত এমআইসিআর  কেন্দ্র সংখ্যা (প্রস্তাবিত)

২০

 

দৈনিক গ (পরিমাণ)

 

 

 

৪০ টি এমআইসিআর  কেন্দ্র

২৭.৪৮

লক্ষ

 

যার মধ্যে ৪টি মহানগর কেন্দ্র

১৭.৪৯

লক্ষ

 

ভারতের বাদবাকি কেন্দ্র

৮.৭৩

লক্ষ

দৈনিক গ(মূল্য)

 

 

 

৪২টি এমআইসিআর  কেন্দ্র

১৪৫৭৮০

কোটি

 

যার মধ্যে ৪টি মহানগর কেন্দ্র

২২৪৩৫

কোটি

 

ভারতের বাদবাকি কেন্দ্র

৪৪৫০

কোটি

উচ্চ-মূল্য নিকাশ কেন্দ্র

১৫ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক +

৩ অন্যান্য

 

 

 

 

 

বৈদ্যুতিন ক্লিয়ারিং

বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থার অন্তর্গত কেন্দ্রসমূহ

 

 

 

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক কেন্দ্র

১৫

 

 

এসবিআই কেন্দ্র

২৫

 

 

এসবিআই ইন্দোর কেন্দ্র

 

 

পিএনবি কেন্দ্র

 

 

ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

 

বৈদ্যুতিন তহবিল স্থানান্তর ব্যবস্থার অন্তর্গত কেন্দ্রসমূহ

১৫

 

 

 

 

 

ব্যাংক সংখ্যা

৩৫

 

 

কেন্দ্রসংখ্যা

১৮২

 

 

শাখা সংখ্যা

৩২৯৫

 

বৈদ্যুতিন নিকাশি ব্যবস্থা ব্যবহারকারী(মুম্বই)

 

 

 

আকলন(জমা)

৫২২

 

 

বিকলন(খরচ)

৫০

 

 

 

 

 

উচ্চ মূল্য ব্যবস্থা

আরটিজিএস

 

 

 

সদস্য ব্যাংক

৯৫+১৫ পিডিএস

 

 

গ্রাহক লেনদেন পরিষেবা সরবরাহকারী ব্যাংক

৭৯

 

 

অন্তর্ভুক্ত কেন্দ্র

৪২০

 

 

ব্যাংক শাখা

৯৬১৪

 

 

দৈনিক পরিমাণ/মূল্য

 

 

 

আন্তর্ব্যাংক

 

 

 

পরিমাণ

৩,৫০০

 

 

মূল্য

৪০,০০০

কোটি

 

গ্রাহক

 

 

 

পরিমাণ

২৫০০

 

 

মূল্য

১০,০০০

কোটি

পিডিও-এনডিএস সদস্য

১৫৯

 

 

দৈনিক পরিমাণ

৬১০

 

 

দৈনিক মূল্য

৮৯৮৪

কোটি

সিবিএলও নিকাশ সদস্য

১১৩

 

 

দৈনিক পরিমাণ

১২৪.৯২

 

 

দৈনিক মূল্য

৪৪৭৬

কোটি

এফএক্স নিকাশ সদস্য

৭৩

 

 

দৈনিক পরিমাণ

১৭৮৫.০৪

 

 

দৈনিক মূল্য

১৬২৩০

কোটি

কার্ডে লেনদেন

বিতরণকৃত কার্ড

 

 

 

আকলন(জমা)

১.৩৫

কোটি

 

বিকলন(খরচ)

৩.৭৯

কোটি

 

স্মার্ট

৩৫৯১৫

 

এটিএম সংখ্যা

১৬,০০০+

 

ক্লিয়ারিং হাউস

নিকাশ ঘর পরিচালক ব্যাংক সমূহ

এমআইসিআর

এমআইসিআর নয়

 

রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

 

স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

১৪

৬৭২

 

স্টেট ব্যাংক অফ বিকানের অ্যান্ড জয়পুর

 

৫০

 

স্টেট ব্যাংক অফ হায়দ্রাবাদ

 

৫৩

 

স্টেট ব্যাংক অফ ইন্দোর

২৩

 

স্টেট ব্যাংক অফ মাইসোর

 

৪৫

 

স্টেট ব্যাংক অফপাতিয়ালা

 

৫০

 

স্টেট ব্যাংক অফ সৌরাষ্ট্র

 

১৯

 

স্টেট ব্যাংক অফ ত্রাভাঙ্কোর

৮৭

 

ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

 

ইউনাইটেড  ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

 

 

ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

 

 

পিএনবি

১০

 

 

বিওবি

 

 

ওবিসি

 

 

কানারা

 

 

সিবিআই

 

 

কর্পোরেশন ব্যাংক

 

 

অন্ধ্র ব্যাংক

 

 

মোট

৪২

১০০৫

 

 

 

 

রাজ্য-গত ক্লিয়ারিং হাউস

 

 

রাজ্য

 

 

 

কর্ণাটক

১০৮

 

 

উত্তর প্রদেশ

১০৫

 

 

কেরল

১০২

 

 
  © ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

1024 x 768 রেজ়োলিউশনে IE5 বা তার চেয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্রাউজ়ার সফটওয়ার দিয়ে সবচেয়ে থেকে ভাল দেখা যাবে।